1. admin@dainikjanatarnews.com : jan@admin :
শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৮:০০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মানিকগঞ্জ পৃথক স্হান হতে অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার জাল দলিল চক্রের ছত্রছায়ায় সাব-রেজিস্ট্রার মেহেদী হাসান: মোটা অঙ্কের ঘুষে চিরিরবন্দরে বদলি! মডেল বানানোর প্রলোভনে তরুণীদের ফাঁদে ফেলছে রাশেদ শরীফ বিপ্লব: উঠতি বয়সের মেয়েদের নিয়ে অবৈধ দেহ ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ শিল্প ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের ‘নবাব’ সলিম উল্লাহর এক ডজন ফ্ল্যাট-প্লটের সন্ধান, দুদকের অনুসন্ধান শুরু যমুনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের জন্য ০৮ জনকে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দৌলতপুরে ইউসুফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার-২ দৌলতপুরে ব্যাডমিন্টন খেলা কে কেন্দ্র ইউছুপ শেখ কে পিটিয়ে হত্যা!  ঘিওরে ডেরা রিসোর্ট বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন মিঠাপুকুরে ১০ চাকার ডাম্প ট্রাক বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন মানিকগঞ্জের ঘিওরে রাতের আঁধারে তিন ফসলি কৃষি জমির মাটি কাটার তান্ডব

মানিকগঞ্জে ইট ভাটা বিষয়ক আইনের প্রয়োগ ও কৃষি জমির মাটি কাটা বন্ধ চাই!

  • প্রকাশিত: বুধবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩২৫ বার শেয়ার হয়েছে

মোঃ জাহাঙ্গীর আলম  নিজস্ব প্রতিবেদক

ইট প্রস্তুত ও ইট ভাটা স্থাপন সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিংয়ের জন্য দেশে একটি আইন আছে। কিন্তু আইন থাকলেও এ আইনের প্রয়োগ এখনো পর্যন্ত লক্ষ্য করা যায়না।

জরমজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের খোলা পাড়া মৌজায় কদ্দুস কোম্পানি ও রুপি কোম্পানি কৃষকের তিন ফসলি জমির মাটি কেটে রাতের আঁধারে ইট বাটায় পাচার করছে। কদ্দুস ও রুমি কোম্পানির ভয়ে সাধারণ কৃষকরা ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না বলে জানান এলাকাবাসী।

সরকার ইট প্রস্তুত ও ইট ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩ প্রণয়ন করেছে।

কিন্তু এ আইনের পুরোপুরি বাস্তবায়ন এখনও সম্ভব হয়নি। আইনে যেসব ক্ষমতা দেয়া আছে সেসব ক্ষমতা প্রয়োগ না করার ফলে আইনের এরকম বরখেলাপ চলছেই।

আইনে আছে, জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স বা অনুমতি ছাড়া কোনো ইট ভাটা স্থাপন করা যাবেনা (৪ ধারা)। কিন্তু মানিকগঞ্জ জেলার সব ইট ভাটার কি অনুমোদন আছে? অবস্থাদৃষ্টে সেরকম মনে হয়না।

বিশেষ করে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে যে ভাবে ইট ভাটা স্থাপন করা হচ্ছে তাতে জেলা প্রশাসনের অনুমোদনের বিষয়টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আর যদি স্থান নির্বিশেষে এভাবে অনুমোদন দেয়াই হয় তবে সেটিও বিবেচনা করা যেতে পারে।

চারদিকে কৃষিজমি মাঝখানে ইটভাটা অথবা চারদিকে বাড়ি মাঝখানে ইটভাটা এরকম চিত্র সিংগাইরে দেখা যায়। জেলা প্রশাসনের অনুমোদন সাপেক্ষে নিশ্চয় এরকম হওয়ার কথা না। ঢাকার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল মানিকগঞ্জ অথবা সড়ক মহাসড়কের পাশে কৃষিজমিতে অথবা গাছ কেটে এরকম অনেক ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে।

প্রয়োজনেই মানুষ প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অবকাঠামো স্থাপন করে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। অবকাঠামো স্থাপন উন্নয়নেরও অংশ। অবকাঠামো নির্মানের জন্য ইট-পাথর-রড-সিমেন্ট ইত্যাদি অপরিহার্য। নি:সন্দেহে প্রয়োজনের খাতিরেই ইটভাটা স্থাপন করা হচ্ছে। কিন্তু একটি প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে পরিবেশ, গ্রামীণ রাস্তা ঘাট, জনস্বাস্থ্য, কৃষকের তিন ফসলি কৃষি জমি, অদূর ভবিষ্যৎ চরমভাবে খতিগস্ত হচ্ছে। তারপরও মাটিখোকোরা কাউকে তোয়াক্কা না করে কৃষকের জমি জোর করে এইসব কাজ করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। ফলে কৃষক হারাচ্ছে জমি হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ, গ্রামীণ রাস্তা ঘাট, আবাদি শস্য।

আইনে আছে, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যক্তি ইট তৈরির জন্য কৃষিজমি, টিলা, মজা পুকুর, খাল, বিল, খাঁড়ি, দিঘি, নদ-নদী, বা পতিত জায়গা থেকে মাটি কাটা নিষিদ্ধ ছাড়াও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত উপজেলা, ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে, ভারি যানবাহন দ্বারা ইট বা ইটের কাঁচামাল পরিবহন না করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হিসেবে উল্লেখ আছে (৫ ধারা)। কিন্তু বাস্তবে তো দেখা যায় অধিকাংশ ইট ভাটার জন্যই তিন ফসলি কৃষিজমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে মজা পুকুর খাল, বিল, খাঁড়ি, দিঘি, নদ-নদী, বা পতিত জায়গা থেকে মাটি কাটা হয়। এসব জায়গা থেকে মাটি তুলেই তৈরি হয় ইট।

এছাড়া ৫(৩) ধারায় ইটের প্রস্তুত প্রণালীও বর্ণনা করা হয়েছে। আইনে বলা আছে, ইটের কাঁচামাল হিসাবে মাটির ব্যবহার হ্রাস করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ইট ভাটায় কমপক্ষে ৫০ (পঞ্চাশ) শতাংশ ফাঁপা ইট প্রস্তুত করতে হবে। কিন্তু আইনের এ বিধান কে তোয়াক্কা করছে না কেউ ?

আইনানুযায়ী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্মিত উপজেলা বা ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে ইটভাটায় চলাচলের জন্য কোনো ভারি যানবাহন চলাচল করতে পারবেনা। কিন্তু ইট আনা নেয়ার জন্য সরকার ও স্থানীয় সরকারের নির্মিত সড়ক বা পথ দিয়েই চলাচল করছে এসব ভারি যানবাহন। মানিকগঞ্জের উপসড়ক ও রাস্তার বেহাল দশা হওয়ার অন্যতম কারণ এসব যানবাহন।

শুধু ইটই নয়, ইটের তৈরির কাচামালও আনা নেয়া করা হয় এসব সড়ক দিয়ে। সব কাজই হচ্ছে বিদ্যমান সড়ক ব্যবহার করে। এতে সাধারণ মানুষের চলাচল মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।

ইট ভাটার জ্বালানি হিসেবে কী ব্যবহার হবে আইনে তাও বলা আছে। কিন্তু আইনের প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।

আইনানুযায়ী আবাসিক, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যেক এলাকা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর, সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান বা জলাভূমি. কৃষি জমি ও প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় কোনো ইট ভাটা স্থাপন করা যাবেনা। কিন্তু এ বিধানের কি কখনো প্রয়োগ হচ্ছে? অভয়ারণ্য, বাড়ি ঘর বা তিন ফসলি কৃষি জমিতে গড়ে উঠেছে ব্যাঙের ছাতার মত ইট ভাটা।

যদি কোনো আইন লংঘন করে জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া ইটভাটায় ইট প্রস্তুত করেন তাহলে তিনি সর্বোচ্চ ১ বছরের কারাদণ্ড বা ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। এছাড়া আইনে অননুমোদিত স্থানে ইট ভাটা স্থাপন করলে দুই লক্ষ টাকা জরিমানা ও দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড পেতে পারেন। কিন্তু আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়াতে ইট ভাটার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছে না। এভাবে ইট ভাটা স্থাপনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আমাদের পরিবেশ ও কৃষি জমি, জনস্বাস্থ্য যার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রভাব বিস্তার করছে।

ইট ভাটা নিষেধ করা সম্ভব নয়, এর প্রয়োজনও নেই। প্রয়োজন পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতিতে ইট তৈরিকে উদ্বুদ্ধ ও বাধ্যতামুলক করা। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পদ্ধতিতে ইট তৈরিকে নিয়ন্ত্রণ ও বন্ধ করতে হবে। আইনানুযায়ীই ইট ভাটা স্থাপন ও পরিচালনা করতে হবে।

বলধারা ইউনিয়ন কৃষক নাজিম উদ্দীন বলেন, বলধারা ইটবাটার মালিকেরা এক বিঘা কৃষি জমি কাটে তিন বিঘা ভাংগে যদি এভাবে তিন ফসলির মাটি কাটা চলমান থাকে তাহলে কৃষকরা একদম বাঁচবে না। টেলিখোলা গ্রামের কৃষক ইউনুস আলী জানান খোলা পাড়া মৌজায় যত সব তিন ফসলি জমি ছিলো সব জমি পুকুর করে ফেলছে।

কদ্দুস কোম্পানির বক্তব্য এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

সিংগাইর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জনাব কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, আমি ব্যবস্হা নিচ্ছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি