মোঃ বজলুর রহমান
ওয়াজ মাহফিলে আলোচিত উগ্র সংগঠন ইসকনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় মারধরের শিকার হয়েছেন মহিলা মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সোলাইমান হোসেন। উপর্যুপরি হামলায় গুরুতর আহত হয়ে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।
শনিবার বিকেলে সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের আন নূর তাহফিজুল কুরআন মহিলা মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী মাওলানা সোলাইমান হোসেন । তিনি কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চরকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং ৮নং ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর স্ত্রী শেফালী আক্তার ছয় জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১০ থেকে ১২ জনের নামে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন । এ ঘটনায় রাতেই প্রধান আসামি কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য তাইজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর শনিবার দিবাগত রাতে কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চর কৃষ্ণপুর মোহাম্মাদীয়া তাজবিদুল কুরআন হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষ ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করে। সেখানে প্রধান বক্তা হিসেবে ওয়াজ করেন মাওলানা ইয়াহিয়া তাকী। ওয়াজের একপর্যায়ে তিনি ইসকনের উগ্রতা এবং ইসকন সমর্থকদের হামলায় আইনজীবী হত্যার বিষয়ে কথা বলেন। এ সময় ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য তাইজুল ইসলাম বক্তাকে এ বিষয়ে ওয়াজ করতে নিষেধ করেন। এতে মাহফিলের শ্রোতা দর্শকেরা তাইজুল মেম্বারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং বক্তাকে তার ওয়াজ অব্যাহত রাখতে বলেন। সেসময় অনেকের সাথে সভাপতির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন মাওলানা সোলাইমান হোসেন । পরের দিন বিকেলে তাইজুল মেম্বারের ছেলে রিফাত, সজল তারেক, সোলাইমান খানসহ ১০ থেকে ১২জনকে সাথে নিয়ে আন নূর মহিলা মাদ্রাসায় যান। তারা বক্তার পক্ষে ও সভাপতি তাইজুল মেম্বারের বিপক্ষে শ্লোগান দেওয়ার সাহস কোথায় পেলেন বলে মাওলানা সোলাইমান হোসেনের উপর হামলা করে। এরপর স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে সোলাইমান হোসেন কে মানিকগঞ্জ জেলাসদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, অভিযোগ পেয়ে রাতেই প্রধান আসামী তাইজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যহত আছে।
এদিকে জামাত কর্মী মাওলানা সোলাইমান হোসেনের উপর এ বর্বর রচিত হামলার ঘটনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে । স্থানীয় জামাত-বিএনপি কর্মীসহ ইসলামী তাওহিদী জনতা কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন সহ মানিকগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে দুষ্কৃতিদের কঠিন বিচার দাবি জানান। ওই দুষ্কৃতীদের কঠিন বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা মানববন্ধন ও আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে ঘোষণা দেন ।
সোমবার মানিকগঞ্জ শহরে ভাষা শহীদ রফিক সড়কে দুষ্কৃতীদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন জেলার জামাত ও বিএনপির বিভিন্ন নেতাকর্মী ও ইসলামী তাওহিদী জনতা । বক্তব্যে মানিকগঞ্জ জেলা জামাতের আমির হাফেজ মাওলানা কামরুল ইসলাম বলেন, ইসলাম মানে শান্তি । এ শান্তির ধর্মে মুসলিম পরিচয়ে হিন্দুত্ববাদী ভারতের দালাল গুষ্টি ইসকন পক্ষে সমর্থিত কোন ব্যক্তি জামাতের কর্মীসহ সাধারণ জনতার ওপর জুলুম করলে, সে যেই হোক, তাকে ছাড় দেয়া যাবে না ।
Leave a Reply